ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪ বিডি ডেক্সঃ বুয়েন্স আয়ার্স থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কোণে একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন সবাই। বিশ্বকাপের ভেন্যু কাতারও বা কম যায় কীসে। সবার মুখে প্রায় একই আলোচনা। সবাই যেন উত্তেজনায় কাঁপছে! আলোচনার সব উত্তাপ বলতে গেলে সেই একজনকে ঘিরে। জীবনে তো সবকিছুরই প্রাপ্তিযোগ হয়েছে। শুধু বিশ্বকাপ ট্রফি ছাড়া। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে তাই এবার জল্পনা-কল্পনা বেড়ে লক্ষগুণ। লক্ষ-কোটি টাকার প্রশ্ন। লিওনেল মেসির হাতে কি ট্রফি শোভা পাবে? মরুর বুক থেকে কি অমরত্বের সুধা পাবেন ‘ভিনগ্রহের ফুটবলার’?
এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অনেকেই নানান হিসাব-নিকাশ ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন। রোজারিওর সেই ছোট্ট ছেলেটি দুনিয়া কাঁপিয়ে এখন সবার আশা-ভরসার প্রতীক। তাকে ঘিরে যেমন আর্জেন্টিনা স্বপ্ন দেখছে, তেমনি সারা বিশ্বের অনেকেই! অন্তত দিনের পর দিন যারা রাত জেগে মেসির বাঁ পায়ের জাদু দেখেছেন, ফুটবলকে তুলির আঁচড়ে অনন্য শিল্পকর্ম গড়ে তোলা জাদুকরকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতেই পারেন। আর তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আপনাকে তো আশান্বিত করবেই। কী করেননি এই কাতারে এসে!
এখন পর্যন্ত ৫টি গোল করেছেন। অ্যাসিস্ট তিনটি। এটা শুধু পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে। গোল ও অ্যাসিস্ট ছাড়াও মাঠে মেসির উপস্থিতি কেমন আলোড়ন তোলে? যারা ৩৫ বছর বয়সী প্লে-মেকারের খেলা দেখছেন তারা তো একবাক্যে দরাজ কণ্ঠে সার্টিফিকেট দিতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না। মেসি মাঠে থাকা মানে সব স্পটলাইট নিজের দিকে কেড়ে নেওয়া। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলে কখন যে চিতার মতো ক্ষিপ্রগতিতে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে পড়বেন তা দেখে চোখের শান্তি, মনেরও।
মেসি এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে আটকে রাখা যায় না। আটকে রাখার চেষ্টা করলেও কখন যে ফাঁক গলে বেরিয়ে যাবেন তা নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কাতারে এসে মেসি রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। মেসি জানেন দলকে কিছু পাইয়ে দিতে হলে তাকে কিছু করে দেখাতে হবে। তাই তো গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে সেমিফাইনাল পর্যন্ত অনিন্দ্য সুন্দর ফুটবল খেলে যাচ্ছেন। এখন শেষ তুলির আঁচড়টা ফাইনালের জন্য তুলে রাখা।
প্রতিটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের কোচরা তাকে আটকানোর নানান ফন্দি-ফিকির করে থাকেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সেভাবে সফল হতে পারেননি। প্রতিটি ম্যাচের আগে শোনা যায় অমুক ডিফেন্ডার মেসির সঙ্গে সেঁটে থাকবেন। খেলতে দেবেন না। ৯০ মিনিট আটকে রাখবেন। কিন্তু আদতে সেভাবে সফল হতে পেরেছেন কমই। এই তো শেষ ম্যাচে ১৫ বছরের ছোট ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার গাভার্দিওলকে যেভাবে ঘোল খাইয়ে আলভারেজকে কাটব্যাক করেছিলেন, তা তো এখনও মায়াজাদু হয়ে আছে।৩৫ বছর বয়সে পায়ের ভেল্কি। জাদুকরী পারফরম্যান্স। সবকিছুই আর্জেন্টিনাকে ঘিরে।
২০১৪ সালে ফাইনালে প্রথম সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু জার্মানির কাছে হেরে প্রথম সুযোগটা মিস হয়ে যায়। এবার ৮ বছর পর আরও একটি সুবর্ণ সুযোগ। এবার মেসি আগের চেয়ে পরিপক্ব। অভিজ্ঞ। মাঠে কী করতে হবে জানেন। সতীর্থদের দিয়ে কী করাতে হবে তাও ভালো জানেন।
বিশ্বের যারা আর্জেন্টিনা তথা মেসি ভক্ত রয়েছেন তাদের আকুল আবেদন তো আগেই তার দরজায় পৌঁছে গেছে। সেই চাপ সামলে লুসাইলের আইকনিক স্টেডিয়ামে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারলে তো অমরত্বের স্বাদও নেওয়া হবে। মেসি কি পারবেন তা করতে?