ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪ বিডি ডেক্সঃ চার দিনের ঢাকা সফর শেষ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত (উপদেষ্টা) রিয়ার এডমিরাল আইলিন লাউবাচার। গত ৭ই জানুয়ারি একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসা হোয়াইট হাউসের প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা ছেড়ে গেছেন। সফরকালে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও নাগরিক সমাজের বিভিন্ন স্তরে বৈঠক করেছেন।
তার সফর বিষয়ে মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর আইলিন লাউবাচার এবং এনএসসির অন্যান্য প্রতিনিধিরা পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেন। তারা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন। কথা হয়েছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি, সুশাসন এবং নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দূতাবাসের ফেসবুক বার্তায় জানানো হয়, এই সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়েছে তারা।
রিয়ার এডমিরাল আইলিন লাউবাচার গত ৭ই জানুয়ারি একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসা হোয়াইট হাউসের প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা গত দু’দিন ঢাকা এবং কক্সবাজারে সিরিজ বৈঠকে কাটিয়েছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পৃথক বৈঠক। এ ছাড়া তিনি একাধিক মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করে জো বাইডেনের উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকার, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিশ্বের দেশে দেশে সংগ্রামরত মানুষকে সমর্থন দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সমর্থনে বাইডেন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা প্রকাশ্যে কথা বলতে দ্বিধা করবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আইলিন বলেন, বিশ্বজুড়ে শান্তি, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার ভিত্তি হচ্ছে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একে অপরের সঙ্গে সততার ভিত্তিতে কথা বলাকে আমরা শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নিদর্শন বলে মনে করি। নিজেদের দেশেও আইনের সমান প্রয়োগ নিশ্চিত করার মতো জটিল কাজ যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিনিয়ত চালিয়ে যেতে হচ্ছে জানিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধি বলেন, এ ক্ষেত্রে কীভাবে আরও উন্নতি করা যায় তাতেই ওয়াশিংটনের পূর্ণ মনোযোগ। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এসব বিষয়ে গঠনমূলক পরামর্শ পেতে যুক্তরাষ্ট্র সচেতন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের পরামর্শ আমরা গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেই। এটাকে কোনো অবস্থাতেই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করি না।
তিনি আরও বলেন, যখন বিদেশি সরকার, ব্যক্তি বা সংস্থাগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর মন্তব্য, নিরীক্ষণ বা সমালোচনা করে তখনো এটাকে ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ বলে পাল্টা সমালোচনা করে না। মার্কিন প্রতিনিধি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে গণতান্ত্রিক শাসন ক্রমাগতভাবে মানুষের মর্যাদা রক্ষায় কর্তৃত্ববাদকে ছাড়িয়ে যায়। আরও সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীল সমাজ বিনির্মাণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে তা শান্তিপূর্ণ বিশ্বব্যবস্থাকে উৎসাহিত করে।