শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদ্রাসায় ৬ জন শিক্ষক / কর্মচারী পদে সম্প্রতি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় অধ্যক্ষ। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক বিভিন্ন পদে ১০৩ জন প্রার্থী আবেদন করেন। কিন্তু ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: হাতেম আলী দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েকজন প্রার্থীর কাছে নিয়োগ বাবদ লাখ-লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ বানিজ্য করেছেন। যারা কম টাকা দিয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে বেশি টাকা দাতা প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করছেন। গত ৩১ অক্টোবর উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে ফকরুল হাকাম বাবু নামে এক প্রার্থী ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন। এতে বলা হয় ৭ লাখ টাকার চুক্তিতে অধ্যক্ষ হাতেম আলী মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির সম্মতিতে তার কাছে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা নেন। যার স্বাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু তার পরিবর্তে বেশি টাকা পেয়ে অন্যজনকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছে অধ্যক্ষ। নিরুপায় হয়ে ফকরুল হাকাম বাবু তার টাকা ফেরত পেতে ও অধ্যক্ষ হাতেম আলীর অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিকার সহ নিয়োগ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। এদিকে হাতেম আলীকে ঘুষের টাকা প্রদান করে নি:স্ব হয়ে পথে বসেছেন বেকার যুবক ফকরুল হাকাম বাবু। গত ৩০.১২.২০২২ ইং তারিখে আবেদনকারীদের নিযোগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ ধার্য করে পরে অনিবার্য কারণে নোটিশ প্রদান করে সেই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন অধ্যক্ষ হাতেম আলী। আবারও গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্নের পায়তারা চালাচ্ছেন ওই অধ্যক্ষ।
অপরদিকে- অধ্যক্ষ হাতেম আলী ২০২১ সালে মাদ্রাসার ১৬ একর জমি ইজারা বিক্রির টাকা, মাদরাসার টিনসেড ঘর পুরোনো টিন, গ্রীল দরজা বিক্রির ৭০ হাজার টাকা, ব্যাংক একাউন্টে সঞ্চয়ের এক লাখ টাকা, করোনাকালীন সময়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রদানকৃত বই ৫ হাজার টাকা, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতো শিক্ষক/কর্মচারীদের এক দিনের সম পরিমান বেতনের টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ, শিক্ষকদের টিউশন ফি, ছাত্র-ছাত্রীদের সনদপত্র, প্রশংসাপত্র প্রদানের সময় গৃহীত অর্থ রশিদ না দিয়ে আত্মসাৎ সহ লাখ-লাখ টাকা আত্বসাত ও সীমাহীন দুর্নীতি করেন অধ্যক্ষ হাতেম আলী। তার এসব দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর কাছে ২০২২ সালের ৩০ মে একটি দরখাস্ত দিয়েছেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক।
এবিষয়ে ফকরুল হাকাম বাবু বলেন- আমার বাসায় এসে অধ্যক্ষ হাতেম আলী ৪ লাখ টাকা নেন। বাকী ১০ হাজার টাকা বিকাশ নম্বরে নিয়েছেন। এর মধ্যে তিনি এক লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকী টাকা দেই দিচ্ছি বলে কাল ক্ষেপন করেন। তার চাকুরির প্রলোভনে আমি দাবিকৃত ঘুষের টাকা দিয়ে এখন একবারে নি:স্ব হয়ে পথে পথে ঘুরছি।
এ ব্যাপারে নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: হাতেম আলী বলেন, মোজাম্মেল হক ও বাবু আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধের পাঁয়তারা করছে।
ফকরুল হাকাম বাবু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর গত ৩১.১০.২০২২ ইং তারিখে মাদরাসার অধ্যক্ষ হাতেম আলীর বিরৃুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর কবির তা অস্বীকার করেন।